টিকা আনার জন্য সরকারকে ‘শক্ত স্টেপ’ নিতে হবে -পাপন

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করোনার টিকা ‘কোভিশিল্ড’ নামে উৎপাদন করছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। সেখান থেকে ৩ কোটি ডোজ কিনেছে বাংলাদেশ সরকার। যা প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে দেওয়ার কথা। কিন্তু প্রথম মাসে ৫০ লাখ ডোজ দেওয়া হলেও দ্বিতীয় কিস্তিতে এসেছে মাত্র ২০ লাখ ডোজ। এর পর আর কোনো টিকার চালান আসেনি। কারণ ভারত সরকার অভ্যন্তরীণ চাহিদার কথা বলে আপাতত টিকা রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে।

এদিকে, বাংলাদেশের কাছে থাকা টিকার মজুত শেষ হওয়ার পথে। এ অবস্থায় টিকা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিকল্প উৎস সন্ধান এবং দেশে উৎপাদনের প্রচেষ্টাও চলছে। এমনই প্রেক্ষাপটে শনিবার বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের বলেন, ভারত থেকে টিকা আনার জন্য সরকারকে ‘শক্ত স্টেপ’ নিতে হবে।

নাজমুল হাসান পাপনের এই বক্তব্যের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, শক্ত স্টেপটা আসলে কী?

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের (ভারত) পরররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি। এমনকি এ বিষয়ে ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ’ করা হয়েছে।

ড. মোমেন বলেন, শক্ত স্টেপটা আসলে কী? তাদের পরররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আলাপ করেছি। তিনি বলেছেন, ‘এটি (টিকা) দেওয়া হবে। তবে এই মুহূর্তে একটি ডিসরাপশন হচ্ছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী) খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, চুক্তি অনুযায়ী (টিকা) দেওয়া হবে, কিন্তু এই মুহূর্তে খানিকটা ডিসরাপশন হচ্ছে। কারণ বর্তমানে দেশের চাহিদা অনেক বেশি। এমনকি অন্য দেশেও টিকা পাঠাতে পারছি না আমরা।’

তিনি আরো জানান, (ঢাকায় নিযুক্ত) ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করে দিল্লিতে পাঠানো হয়েছিল। আসলে আমরা যা করতে পারি তা হলো- ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিষয়টা বলতে পারি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন আরো বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা হলো— প্রধানমন্ত্রী নিজে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে (এ ব্যাপারে) অনুরোধ করেছেন। আর আমরা কোথায় বলবো?’

উল্লেখ্য, সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে টিকা আমদানির যে চুক্তি বাংলাদেশ সরকার করেছে, তা সম্পাদন করা হয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে। অর্থাৎ দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী এ প্রতিষ্ঠানটি এখানে থার্ড পার্টি বা মাধ্যম হিসেবে যুক্ত আছে।