দেশে করোনার মধ্যে ঈদের ছবি মুক্তি অনিশ্চিত

বৈশ্বিক মহামারী করোনার ভয়াল থাবায় পৃথিবীবাসী। করোনার সংক্রমণ এড়াতে জনসমাগম এলাকাগুলো মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন না। তাছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন মানুষজন। এমতাবস্থায় জনসমাগম এলাকাগুলো বন্ধ রয়েছে। অন্যসবকিছুর মতোই সারা বিশ্বে থিয়েটারগুলোও বন্ধ। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। এমন পরিস্থিতির মধ্যে এবারের ঈদুল-ফিতরে মুক্তির তালিকায় থাকা সিনেমাগুলোর মুক্তির অনিশ্চিয়তার মুখে পড়ছে।

সিনেমার শুটিং শুরু থেকেই ঈদকে কেন্দ্র করে মুক্তির আলোচনায় ছিল ‘শান’, ‘পরাণ’, ‘দ্বিন দ্য ডে, মিশন এক্সট্রিম’, ‘বিদ্রোহী’, ছবিগুলো। তবে এই ছবিগুলোর একটিও মুক্তি পাচ্ছে না ঈদে। তবে নির্মতারা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে সিনেমা মুক্তি দিবেন না তারা।

সিনেমার সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলমান করোনার কারণে সারা পৃথিবীর মানুষ আতঙ্কিত। আর এই রোগ থেকে বাঁচতে সবাই বেশিই সচেতন। সরকার থেকে শুরু করে সচেতনমহল সাধারণ মানুষকে সচেতন করছেন। তাছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব প্রেক্ষাগৃহ। এমন পরিস্থিতিতে ঈদুল ফিতরে সিনেমা মুক্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে প্রেক্ষাগৃহ খোলার আগ্রহ নেই হল মালিকদের। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে এবারের ঈদে নতুন কোনো ছবি প্রেক্ষাগৃহের মুখ দেখছে না।

এদিকে ঈদের জন্য ঘোষিত শাকিব খানকে নিয়ে অনন্য মামুনের ‘নবাব এলএলবি : ব্যাক ফর জাস্টিস’ ছবির শুটিংও অনিশ্চিত। ছবিটির শুটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল গেল মার্চের ২৮ তারিখে। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবে সিনেমাটির শুটিং শুরু হয়নি।

এর আগে করোনা প্রকোপ শুরুর আগে বেশ কিছু সিনেমা মুক্তির প্রচার শুরু করেছিল সংশ্লিষ্টরা। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে নয়, স্বাভাবিক মুক্তির তালিকায় ছিল ছবিগুলো। এ তালিকায় রয়েছে—‘বিশ্বসুন্দরী’, ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’, ‘জ্বীন’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ-২’, ‘বান্ধব’, ‘মন দেব মন নেব’, ‘আমার মা’, ‘পরাণ’, ‘বিক্ষোভ’ সহ বেশ কটি সিনেমা।

হল মালিক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশিদ বলেন, ‘হল খুলতে চাই সরকার ঘোষণা দিলেই। কিন্তু স্বাস্থ্য ঝুঁকি হলে কেউ যাবে না। আর প্রেক্ষাগৃহ একটি বদ্ধ ঘর। এর মধ্যে একটি হাঁচি দিলে সবার মধ্যে সংক্রমণ ছড়াবে। এমন ঝুঁকি নিয়ে হলে কেউ যাবে না। তাছাড়া আমরা নিজেদের ব্যবসার জন্য ঝুঁকি নিতে পারি না। তাই এবার ঢালিউডের ঈদ নতুন সিনেমা বিহীন থাকবে!

প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘করোনার প্রকোপে সারাবিশ্বের মানুষ ঘরবন্দি। বাংলাদেশেও তাই বলা হচ্ছে। সাধারণ ছুটি চলছে সব সেক্টরে। এমন অবস্থা কতদিন থাকবে তা বলা মুশকিল। তাই রোজার ঈদেও ছবি মুক্তি অনিশ্চিত।

ঈদে সিনেমা হল বন্ধ থাকলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঈদের বাজারেই সিনেমার ব্যবসা হয়। বিশেষ করে রোজার ঈদে ব্যবসা সবচেয়ে বেশি হয়। কিন্তু এবার ঈদে যদি সিনেমা মুক্তি না পায় তাহলে এই সেক্টরটা সবচেয়ে বেশি লস করবে।

শুধু সিনেমায় মুক্তিই নয় সিনেমার নির্মাণ কাজও থমকে গেছে। নির্মাধীন সিনেমাগুলোর মধ্যে কোনোটির ৬০ ভাগ আবার কোনোটির নব্বই ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পর করোনার প্রকোপে আটকে আছে।

তবে সিনেমার মানুষরা আশা ছাড়ছেন না। তাদের ধারণা খুব শিগগিরই করোনা শেষে আবারও লাইট-ক্যামেরায় মুখরিত হবে। হলগুলো ফিরে পাবে তার ঐতিহ্য। সিনেমা মুক্তি নিয়ে নির্মাতা-প্রযোজকরা কষবেন হিসাব।