
চাঁদের বুকে এবার পানির অস্তিত্ব পাওয়া যাওয়ার তথ্য সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত করেছেন মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা। ফলে ভবিষ্যতে সেখানে মার্কিন ঘাঁটি তৈরির যে আশা, তা অনেকটাই বেড়ে গেলো।
নাসার মহাকাশ পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের পরিচালক পল হার্টজ বলছেন, চাঁদের যে অংশে সূর্যের আলো পড়ে, সেখানে পানি থাকতে পারে বলে আগেই ধারণা করা হয়েছিল। আর এখন সেই ধারণা সত্য হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, নেচার এ্যাস্ট্রনমি নামের একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত নিবন্ধে এই আবিষ্কারের কথা বলা হয়েছে। যা নিশ্চিত করেছে নাসার স্ট্রাটোস্ফেরিক অবজারভেটরি ফর ইনফ্রারেড এ্যাস্ট্রনমি বা সোফিয়া।
তারা জানায়, চাঁদের বুকে পাওয়া পানির অণুতে দুটি হাইড্রোজেন ও একটি অক্সিজেনের পরমাণুর কণা আছে। অবশ্য এর আগেও চন্দ্রপৃষ্ঠে কিছু হাইড্রোজেনের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু তা পানির আকারে কি না, তা স্পষ্ট হয়নি। তবে এবার চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে ক্লাভিয়াস নামে একটি জ্বালামুখে এর অস্তিত্ব ধরা পড়েছে।
এক ঘনমিটার চাঁদের মাটিতে প্রায় ১২ আউন্সের একটি বোতলের সমান পানি আছে জানিয়ে নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ফেলো কেসি হনিবল বলেন, তুলনা করলে দেখা যায়, সাহারা মরুভূমির মাটিতে থাকা পানির চেয়েও প্রায় ১০০ গুণ কম পানি আছে চাঁদের মাটিতে। তবুও এই আবিষ্কার নতুন কিছু প্রশ্ন তুলেছে।
চাঁদের দুই মেরুর কিছু অংশ আছে, যেখানে কখনোই সূর্যের আলো পড়ে না। সেই অংশগুলোতে বরফের অস্তিত্ব আগেই নিশ্চিত করেছিলেন বিজ্ঞানীরা।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের মিল্টন কীন্সের ওপেন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী হানা সার্জেন্ট বলেন, আগে যা অনুমান করা হয়েছিল, তার চেয়ে চাঁদে আসলে অনেক বেশি পানি আছে। এর ফলে এই পানিকে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেলো।
অবশ্য এই পানি আহরণ করা গেলে সেখানকার বরফ ও পানি একটা ‘চান্দ্র অর্থনীতির’ ভিত্তি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, হয়তো এমনটাও হতে পারে যে, একদিন চাঁদের বুকের এ পানি মানুষ পান করবে, খাদ্য চাষ বা রকেটের জ্বালানি তৈরির জন্য ব্যবহার করবে। মহাশূন্যে আরো দূরের কোনো অভিযানেও কাজে লাগতে পারে।