বরিশালে নতুন করোনা শনাক্ত ৮৪, মৃত্যু বেড়ে ২৭

বরিশাল বিভাগে নতুন করে ৮৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন এই ৮৪ জনকে নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ২৯৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় এই বিভাগে উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া আরও দুজনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে কোভিড পজিটিভ এসেছে। এ নিয়ে বিভাগে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২৭ জনে।

মারা যাওয়া দুজনের মধ্যে বরিশালের বেসরকারি রাহাত-আনোয়ার হাসপাতলের চেয়ারম্যান ও চিকিৎসক আনোয়ার হোসেন (৫৬) ও পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাকরাবুনিয়া এলাকার (৪৬) অপর এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। চিকিৎসক আনোয়ার হোসেন গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মির্জাগঞ্জের ওই ব্যক্তি মারা যান ৪ জুন দিবাগত রাতে বাড়িতে। তিনি ঢাকায় গাড়িচালক ছিলেন। সম্প্রতি বাড়ি ফেরার পর উপসর্গ নিয়ে মারা যান তিনি। তাঁর স্ত্রীরও (৩৫) করোনা পজিটিভ।

এ নিয়ে বিভাগে ২৭ জন কোভিড-১৯ রোগী মারা গেলেন। এর মধ্যে বরিশালে ১০ জন, পটুয়াখালীতে ৭, পিরোজপুরে ৩, বরগুনায় ২, ঝালকাঠিতে ৩ ও ভোলায় ২ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ১৭ জনই মারা যান এবং শনাক্ত হন চলতি জুন মাসে।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, নতুন করে শনাক্ত হওয়া ৮৪ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরিশাল জেলায় ৫১ জন। এ নিয়ে জেলায় রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১০। বরিশালের পর ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে পটুয়াখালী জেলায়। এ জেলায় নতুন ১২ জনসহ মোট কোভিডে আক্রান্ত ১২৫ জন। এ ছাড়া পিরোজপুরে নতুন ৫ জনসহ ৯৯ জন, বরগুনায় নতুন ৩ জনসহ ১০০ জন, ঝালকাঠিতে নতুন ৩ জনসহ ৭৮ জন এবং ভোলায় নতুন ১০ জনসহ মোট ৮৬ জন আক্রান্ত।

২৪ ঘণ্টায় বরিশাল জেলায় আক্রান্ত ৫১ জনের ৩০ জনের বরিশাল নগরের বাসিন্দা। এর মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিনজন নার্স, একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, সদর হাসপাতালের একজন চিকিৎসক রয়েছেন। বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত বরিশাল জেলায়, ৮১০ জন। তবে এর সিংহভাগই বরিশাল নগর এলাকার বাসিন্দা। এই সংখ্যা ৬২৭ জন, যা বিভাগের মোট রোগীর ৪৮ দশমিক ৩০ শতাংশ।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ৯ এপ্রিল বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার ৩২ ও ৭০ বছর বয়সী দুই ব্যক্তি করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর পর তাঁদের দুজনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাঁরা করোনা পজিটিভ হওয়ার মধ্য দিয়ে বিভাগের প্রথম দুজন করোনা রোগী শনাক্ত হন। ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিভাগে সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৮৯। ৩১ এপ্রিল তা ১১৭ জনে দাঁড়ায়। এরপর মে মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ২১৬ জনে। মে মাসের শেষ দুই সপ্তাহ তা প্রায় তিন গুণ বেড়ে হয় ৬১৭ জন। আর জুনের ১২ দিনে তা ৬৭২ জন বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২৯৮ জনে, যা মোট শনাক্তের ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।