
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার একটি খুলনার কয়রা। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ঘরবাড়ি, খেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কয়রায় এসবের পাশাপাশি ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ। আর তাতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে অর্ধশতাধিক গ্রাম। ঘূর্ণিঝড় শেষ হতেই সর্বস্ব রক্ষার লড়াইয়ে নামে এলাকাবাসী। আনন্দ তো দূরের কথা, সেই ধারাবাহিকতায় ঈদের দিনেও হাজার হাজার মানুষ নেমে পড়ে বাঁধ নির্মাণে। এক পর্যায়ে পানিতেই সবাই মিলে ঈদের জামাতে অংশ নেন।
জামাতে ইমামতি করেন কয়রা উপজেলার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, আমাদের তো কোনো উৎসব নেই; ঈদের বদলে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে নেমেছি আমরা। লাখ লাখ মানুষ বসবাস করছে পানির মধ্যে, এভাবে তো বেশিদিন টিকে থাকা যাবে না। তাই ঈদের দিনও আমরা বাঁধ নির্মাণে অংশ নিয়েছি।
আম্পানের তাণ্ডবে প্রায় ২১ জায়গায় বাঁধ ভেঙে গেছে কয়রা উপজেলায়। মোট ১২১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ভেঙে গেছে প্রায় ৪০ কিলোমিটার। প্রশাসন থেকে এখনো কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত সেই বাঁধ নির্মাণে নেমে পড়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ।
বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৬২টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। লাখ লাখ মানুষ পানির মধ্যে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পানিতে ডুবে গেছে ৫ হেক্টর চিংড়ি ঘের, যে মাছের বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। নষ্ট হয়েছে খেতের ফসল। সাগরের নোনা পানি জমে থাকার কারণে এলাকাবাসীর নাওয়া-খাওয়াও এক প্রকার বন্ধ আছে।