দেশে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ ইতোমধ্যে ব্যাপক শক্তি অর্জন করে ধ্বংসাত্মক রূপ ধারণ করেছে। তাই দেশের সমুদ্র বন্দরসমূহে দেয়া ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে দিতে বলা হয়েছে। তার পরিবর্তে মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ এবং চরসমূহও এই বিপদ সংকেতের আওতাভুক্ত থাকবে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আজ সোমবার বিকেল ৩টার আবহাওয়ার তথ্য বিশ্লেষণে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ এবং চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে এই জেলাসমূহের ওপর দিয়ে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলার ও নৌকাগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে।

এটি আরো ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং দিক পরিবর্তন করে মঙ্গলবার শেষরাত ও বুধবার বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চলে প্রথমে আঘাত হানতে পারে।

বর্তমানে এটির একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর আগে ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২২৪ কিলোমিটার। আর ২০০৭ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ২২৩ কিলোমিটার।