
ভারতের করোনা মহামারি পরিস্থিতি স্পষ্টভাবেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে। একদিনে দেশটিতে তিন লাখ ৪৬ হাজার নতুন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন দুই হাজার ৬২৪ জন। মহামারির দাপটে ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে।
বহু হাসপাতালে আশঙ্কাজনক রোগীদের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ নেই। বিভিন্ন হাসপাতাল ও রাজ্য বলছে, তারা অক্সিজেনের জন্য ডাকাতি করবে। আর মানুষের জীবন বাঁচাতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রশাসনকে ‘ভিক্ষা, ধার, চুরি বা আমদানি’ করতে বলছে নয়াদিল্লির উচ্চ আদালত।
প্রাদুর্ভাবে টালমাটাল ভারতকে আশ্বাস দিলেও পশ্চিমা বন্ধু রাষ্ট্রগুলো সহযোগিতায় বাস্তবিক কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এসব বিবেচনায় চীনের ‘ফক্স নিউজ’ খ্যাত ট্যাবলয়েড পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস বলছে, একা-অসহায় হয়ে পড়েছে ভারত।
প্রথমে করোনাভাইরাসের ধরনের আগ্রাসিতা তুচ্ছ করে দেখার অভিযোগ রয়েছে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে কিছুটা বড় ধরনের ধর্মীয় তৎপরতায় অনুমোদন দেওয়ার পাশাপাশি মাস্ক পরাসহ করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলোতে জোর দেয়নি তারা।
আর এতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দেশটিকে।
কেবল দুমাসেরও কম সময়ের মধ্যে ভারতের দৈনিক করোনা সংক্রমণ ১০ হাজার থেকে বেড়ে তিন লাখে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের আর কোনো দেশে এমন প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রমণ যখন চূড়ায় ছিল, তখনও না।
এখন ভারতের সঙ্গে সব কূটনৈতিক ব্যক্তিগত যোগাযোগ বাতিল করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। ভারতীয় যাত্রীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে।
করোনার বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনো বাস্তবিক পদক্ষেপ নেয়নি।
এমনকি ভারতে টিকা উৎপাদনের অতিপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল রফতানি বন্ধ রেখেছে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।
ভারতের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই নাজুক। ভারতীয় সমাজের তৃণমূল সাংগঠনিক সক্ষমতাও তথৈবচ। বর্তমান পরিস্থিতির মোকাবিলায় দেশটির নিজের শক্তির ওপর ভরসা করলে এই মানবিক বিপর্যয় আরও মারাত্মক রূপ নেবে। যা সামলানোর সক্ষমতা দেশটির নেই।
মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভারতকে সহযোগিতা ও সমর্থন দিতে ইচ্ছার কথা জানিয়েছে প্রতিবেশী চীন। সীমান্ত নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে চীন-ভারত সম্পর্ক তলানিতে।