
মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধী কোনো ভ্যাকসিনই এখন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে অনুমোদন পায়নি। এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই ভ্যাকসিন দেশে আসার আগেই সেগুলো মজুদ, সরবরাহ ও সঠিকভাবে বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনে কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। বৈঠকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন সরকার প্রধান। পরে গণমাধ্যমকে তথ্যটি জানিয়েছেন পরিকল্পনা সচিব আসাদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন দেশে আসার পর মজুদ, সরবরাহ ও সঠিকভাবে বিতরণের জন্যে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সঠিক তাপমাত্রায় কোল্ড চেইন ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করতে হবে। বৈঠকে এসব নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ভ্যাকসিন কর্মসূচি পরবর্তী বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও জোর দিয়েছেন তিনি।
‘কোল্ড চেইন’ হচ্ছে যেখানে সঠিক তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হয়। কারণ উৎপাদন থেকে শুরু করে মানবদেহে প্রয়োগ পর্যন্ত ভ্যাকসিনকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে গেলে বেশ কিছু নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। বাংলাদেশে হিমাঙ্কের নিচে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ রাখা সম্ভব, যোগ করেন পরিকল্পনা সচিব।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দেশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে ৩ কোটি ভ্যাকসিন কেনার জন্য চুক্তি করেছে সরকার। সেই চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন অনুমোদনের পর প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ দেশে আসবে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি ভ্যাকসিন ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট হয়ে বাংলাদেশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকোর কাছে আসবে। এরপর সেখান থেকে সেগুলো সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ইতোমধ্যে এসব ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য গুদাম প্রস্তুতকরণ এবং কারা আগে পাবেন, তাদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাশাপাশি মানুষের দেহে ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য মাঠপর্যায়েও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রস্তুত করা হচ্ছে।
গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকার, বেক্সিমকো ফার্মা ও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যকার সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পর ভারতে আসবে। সেখান থেকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে তা বাংলাদেশ সরকারকে সরবরাহ করা হবে। এক্ষেত্রে একজন ব্যক্তিকে দুটি করে ডোজ দেয়া হবে। প্রথম দফায় ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে দেয়া হবে। এর ঠিক ২৮দিন পর তাদেরকে আবারও ভ্যাকসিন দেয়া হবে।