
সারাদেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ,প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। আজ ১২ জুন আক্রান্ত ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় কেরানীগঞ্জের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ও দিনদিন বেড়েই চলেছে। কেরানীগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার আক্রান্তের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে। একটি একক উপজেলা হিসেবে করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে ১নম্বরে অবস্থান করছে।
আর এই পরিস্থিতির জন্য সাধারণ জনগনের অসচেতনাই দায়ী । এখনো রাস্তায় অনেক লোকের মুখে মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করতে দেখা যায়। নিউজ ঢাকার এক অনলাইন জরিপে দেখা গেছে, কেরানীগঞ্জে ৩০ শতাংশ মানুষ ঠিক মত মাস্ক ব্যবহার করে,২৫ শতাংশ মানুষ মাস্ক থুতলিতে ঝুলিয়ে রাখে,২০ শতাংশ মানুষ মাস্ক পকেটে রাখে, বাকিরা মাস্ক ব্যবহার করেই না।এ পরিস্থিতিতে কেরানীগঞ্জের ভবিষ্যত নিয়ে উপজেলা প্রশাসন খুবই শংকিত।তাই এখন বলাই যায় কেরানীগঞ্জের অবস্থা ভালো না।
অনুসন্ধানে জানা যায়,কেরানীগঞ্জে মোট ১২ টি ইউনিয়ন।এর মধ্যে ১১ টি ইউনিয়ন করোনা আক্রান্ত হলেও হজরতপুর ইউনিয়ন করোনা মুক্ত ছিল।গত ১০ই জুন হজরতপুরেও করোনা শনাক্ত করার মধ্য দিয়ে ১২ ইউনিয়নই করোনা আক্রান্ত হয়েছে।এর মধ্যে জিঞ্জিরা ইউনিয়নে সর্বাধিক ২০৫ জন করোনা আক্রান্ত।অন্য ইউনিয়নগুলোর মধ্যে শুভাড্যায় ১১১ জন,আগানগরে ৫১ জন, তেঘরিয়ায় ৭৪ জন,শাক্তায় ৫৭ জন, কালিন্দী তে ৩৮ জন,কোন্ডায় ৩২ জন, বাস্তায় ১৩ জন, রুহিতপুরে ১২ জন, কলাতিয়ায় ৯ জন,তারানগরে ১ জন ও হজরতপুরে ১ জন,সার্কেল অফিসের কর্মকর্তা ২ জন ছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার,নার্স, ওয়ার্ড বয় ও ক্লিনার রয়েছে তারা করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে নিজেও আক্রান্ত হয়েছে। এই আক্রান্তের তালিকায় র্যাব, পুলিশের সদস্যরা ও রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তা মীর মোবারক হোসেন আরো বলেন, দিন যত যাচ্ছে করোনা পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। সবাইকে সামনের দিনগুলোতে আরো সচেতন হতে হবে। একমাত্র নিজ থেকে সামাজিকভাবে সচেতন হলে, সামাজিক দূরুত্ব বজায় রাখলেই কেবল করোনাকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। সবাই অবশ্য অবশ্যই মাস্ক পড়বেন।
এ প্রসঙ্গে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথ বলেন, প্রায় ২০ লাখ লোকের বসবাস এই কেরানীগঞ্জে। ঘন জনবসতি এলাকা হওয়ায় কেরানীগঞ্জ এমনিতেই করোনা ঝুঁকিপূর্ন। এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে,যা অত্যন্ত উদ্বেগ জনক ।তাই তিনি কেরানীগঞ্জ বাসীদের উদ্দেশ্য বলেন, অপ্রয়োজনে কেউ বাইরে বের হবেন না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন। নিজে ভালো থাকুন পরিবার ও আশপাশের লোকদের ভালো রাখুন।
উল্লেখ্য গত ৫ই এপ্রিল কেরানীগঞ্জে প্রথম করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করা হয়। এরপর ১০০ অতিক্রম করে গত ২৮ এপ্রিল। ৩ মে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ হয় এবং ২ জুন এ সংখ্যা ৫০০ ছাড়ায় এবং ১২ জুন তা ৬০০ ছাড়িয়ে গেল।এখন পর্যন্ত মৃত্যু বরণ করেছেন ২১ জন ও সুস্থ হয়ে উঠছেন ২০৯ জন।
প্রতিবেদক : টিটু আহম্মেদ (স্টাফরিপোর্টার)