
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন ব্যবস্থা। তবে নিত্যপণ্যসহ জরুরি সেবা প্রদানকারী পরিবহনগুলো চালু রয়েছে। তারপরও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজি ও কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্যের দাম প্রায়ই বেড়ে যায়। এখন সেই বাজারে পড়েছে রোজার প্রভাব।
আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এমন চিত্রই দেখা গেছে। বিশেষ করে, সবজি ও মুরগির দাম বেড়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষরা। আজ যারাই বাজারে গেছেন তাদের প্রত্যেকেরই বাড়তি টাকা গুনতে হয়েছে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আলু, শিম, মূলা, করলা, ঝিঙ্গা, বরবটি, গাজর, বেগুন, পটলসহ আরো বেশ কয়েকটি সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ১০-১৫ টাকা করে বেড়েছে। এর মধ্যে আলুর দাম গত সপ্তাহে কেজিতে ছিল ২০-২৫ টাকা, যা আজকে দাম বেড়ে ৩৫ টাকা হয়েছে। একইভাবে শিমের দাম বেড়ে ৪০ টাকা, করলা, মূলা ও ঝিঙার দাম ৫০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৬০ টাকা ও গাজরের দাম বেড়ে ৪০ টাকা হয়েছে।
এ ছাড়া গত সপ্তাহে ২০ টাকা কেজিতে শসা বিক্রি হলেও আজ সেটি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পটলের কেজি ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকা, বেগুনের কেজি ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা এবং টমেটো ও পেঁপের কেজি ৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ছিল ১২০-১২৫ টাকা। সেটি আজ ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির দামও কেজিতে ৫০-৭০ টাকা বেড়ে ৪০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে গরুর মাংস, খাসির মাংস ও ডিমের দামের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
রাজধানীর মধ্য বাড্ডার এক মুরগি ব্যবসায়ী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে কোনো মুরগির গাড়ি আসছে না। যার কারণে বাজারে কোনো মুরগি নেই। যা আছে সেগুলো শেষ হওয়ার পথে। তাই বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
রামপুরার এক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে কারওয়ান বাজারের খুচরা ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া আড়তেও সবজির সরবরাহ কমে গেছে। ঢাকায় মানুষ কমে গেছে। যারা আছেন তারাও তেমন একটা বের হচ্ছেন না। ফলে বিক্রি কমে গেছে। তাই রোজা আসায় কিছুটা দাম বাড়াতে হয়েছে। তবে অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখনো দাম কম রয়েছে।
সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, করোনার প্রাদুর্ভাবে গত এক মাস ধরে ঘরবন্দি। ইনকাম কমে গেছে। এমন অবস্থায় নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করা মরার ওপর খারার ঘা।
নিম্ন আয়ের মানুষের অবস্থা তো আরো খারাপ। এমনিতেই তাদের অনেকের এক বেলা না খেয়ে থাকতে হয়। এখন দাম বাড়ায় রোজার মাস তারা কীভাবে চলবেন তা নিয়ে চিন্তিত আছেন।