
শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী সদরঘাটের সিনসন ঘাটসহ তিনটি খেয়াঘাট বন্ধ করার প্রতিবাদে কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী সমিতির অন্তর্গত সকল মার্কেটের কয়েক হাজার মালিক কর্মচারী দোকানপাট বন্ধ করেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় তারা গুদারাঘাটের মেইন রোড বন্ধ করে দিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে এলাকা মুখর করে তুলে।তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে নৌকা মাঝিরা বুড়িগঙ্গার সমস্ত খেয়াঘাট বন্ধ করে নদীতে অবরোধ সৃষ্টি করে।এতে নৌকা মাঝি ও গার্মেন্টস শ্রমিকরা নদীতে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে নৌ চলাচল ও বালু বাহি বাল্কহেড সহ সমস্ত নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ সময় তারা বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম পরিচালক ও ঢাকা নদী বন্দরের ইনচার্জ একেএম আরিফ উদ্দিনের অপসারণ দাবি করেন।
আজ ৫ই সেপ্টেম্বর সকাল থেকে কেরানীগঞ্জ গার্মেন্ট ব্যবসায়ীদের ডাকে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।
ব্যবসায়ীরা দাবি করেন এই ঘাটকে কেন্দ্র করেই কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস ব্যবসা গড়ে উঠেছে। এখান দিয়ে প্রতিদিন সারা দেশ থেকে শত শত পাইকার মালামাল ক্রয় করতে আসে। এই ঘাট বন্ধ করে দেয়া হলে গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে বিশাল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।কেরানীগঞ্জে প্রায় ১০০০০ শোরুম ও ৬০০০ কারখানার কয়েক লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। তাই সরকারের কাছে আমাদের আবেদন এই ঘাটটি পুনরায় চালু করা হোক।
এছাড়া শুভাঢ্যা ইউনিয়নের কয়েক হাজার বাসিন্দা প্রতিদিন এখান দিয়ে পারাপার হয়। ছোট ছোট কোমলমতি ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাতায়াত ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ঘাট দিয়ে পারাপার হয়।তাই এই ঘাটটি বন্ধ করে দেয়া হলে, তাদের চলাচলের অনেক অসুবিধা হবে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ প্রসঙ্গে কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুসলিম ঢালীবলেন, বিআইডব্লিউটিএ’সুষ্ঠুভাবে নৌযান চলাচল ও যাত্রী নিরাপত্তার কথা বলে আমাদের এই ঘাট বন্ধ করে দিয়েছে অথচ নৌ-দুর্ঘটনা বিআইডব্লিউটিএর অব্যবস্থাপনার জন্যই ঘটে। নিয়ম হল লঞ্চ ছাড়ার তিন-চার ঘণ্টা আগে ঘাটে এসে যাত্রী উঠাবে কিন্তু দেখা যায় দুই তিনদিন পরে যেই লঞ্চ ছেড়ে যাবে সেই লঞ্চ ঘাটে নোংগর করে থাকে এতে ঘাটে জাহাজের জটের সৃষ্টি হয়,আর এজন্যই দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। বিআইডব্লিউটি কাছে অনুরোধ করবো কয়েক হাজার ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে এই ঘাট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।
সাধারণ ব্যবসায়ীদের আন্দোলন ক্রমেই বিক্ষিপ্ত আকার ধারন করলে সমিতির পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের বলা হয়, আমরা ঢাকা 3 আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা আগামীকাল বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের সাথে এ বিষয়ে বৈঠক করে একটা যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত নিবেন।তাই আপাতত আজ আন্দোলন স্থগিত রাখতে সাধারণ ব্যবসায়ীদের প্রতি সমিতির থেকে অনুরোধ করা হয়। এই অনুরোধের প্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীরা আন্দোলন আপাতত স্থগিত করার ঘোষণা দেন।
প্রতিবেদক : টিটু আহম্মেদ (স্টাফরিপোর্টার)