রাজধানীতে নতুন করে ১২ এলাকা লকডাউন

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে। ফলে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যাও বেশি হচ্ছে। আজ মঙ্গলবারের হিসাব অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪১ জন আক্রান্ত এবং ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২০ জনই রাজধানীর বাসিন্দা বলে জানিয়েছে সরকারের জাতীয় রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এর পরই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের ১২ এলাকা নতুন করে লকডাউন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লকডাউন ঘোষণার পর ওইসব এলাকায় কেউ ঢুকতেও পারবে না এবং কেউ বাইরে যেতে পারবে না। কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে পুলিশ তা পৌঁছে দেবে।

ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী আজ মঙ্গলবার বিকেলে গণমাধ্যমকে জানান, উত্তর বাড্ডার খানবাগ রোডের একটি বাড়িতে এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরই ওই বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এ ছাড়া বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এক বাড়িতে এক নারীর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এরপর আট পরিবারের ওই ভবনটি লকডাউন করা হয়েছে।

চকবাজার থানার ওসি মওদুত হাওলাদার মঙ্গলবার বিকেলে জানান, পুরান ঢাকার খাজে দেওয়ান লেনে একটি মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি ও এক নারী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন নিশ্চিত হওয়ায় প্রায় দুই শ ভবন লকডাউন করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বংশাল থানার ওসি শাহীন ফকির জানান, সিদ্দিকবাজারের রোজ মেরিনার্স নামে একটি ভবন লকডাউন করা হয়েছে। এটি একটি মার্কেট। কিন্তু ওই মার্কেটের ওপর ৪০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। আর ওই ফ্ল্যাটেই ৫৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এ ছাড়া লালবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আসলাম হোসেন জানান, সেখানকার বড়বাগ মসজিদ রোডে একজন এবং নবাবগঞ্জ রোডে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ কারণে মসজিদ এলাকার ৫টি বাড়ি এবং নবাবগঞ্জ এলাকার ক্রিসেন্ট ক্লাব গলি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

অন্যদিকে, মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় কয়েকজনের শরীরে করোনার উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ায় সেখানকার ৬টি এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির মিরপুর জোনের সহকারী কমিশনার রৌশনুল হক সৈকত জানান, লকডাউন করা এলাকাগুলো হলো- কৃষি মার্কেটের সামনের এলাকা, তাজমহল রোড মিনার মসজিদ এলাকা, রাজিয়া সুলতানা রোড, বাবর রোড, বছিলা ও আদাবর এলাকার কয়েকটি বাড়ি ও রাস্তা।

উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ প্রথম দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর পর রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগ এলাকায় করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় ওই এলাকাটি লকডাউন করা হয়।

এদিকে, আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়ে বলেন, যে এলাকায় করোনা রোগী পাওয়া যাবে সে এলাকা পুরোপুরি লকডাউন করতে হবে যাতে ছোঁয়াচে এ রোগটি ছড়াতে না পারে। এর পরই শুধু রাজধানীতে এতগুলো এলাকা লকডাউন করা হলো।