
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গতকাল রোববার বিকেলে আরও এক যুবকের মৃত হয়েছে। এ নিয়ে এই হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আট ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনের মৃত্যু হলো। হাসপাতালের পরিচালক মো. বাকির হোসেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে বরিশালে ৯ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে গতকাল সবচেয়ে কম রোগী আক্রান্ত হয়েছে। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে করোনা পরীক্ষাগারে (ল্যাব) গতকাল ৪৪ জন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা হলেও আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন একজন। তিনি বরিশাল নগরের পূর্ব রূপাতলী এলাকার ২৮ বছর বয়সী এক তরুণ। বরিশাল নগরে এই প্রথম কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হলেন। তিনি একজন ছাত্র।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বিকেলে ২৫ বয়সী ওই যুবক মারা যান। তাঁর বাড়ি মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায়। গৃহহীন ওই ব্যক্তি পরিবার নিয়ে নৌকায় বসবাস করতেন। এর আগে গতকাল সকালে করোনা ইউনিটে মারা যান পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার এক ভ্যানচালক। তাঁদের নমুনা সংগ্রহ হলেও পরীক্ষা হয়নি।
গতকাল বিকেলে মারা যাওয়া যুবকের প্রতিবেশী চুন্নু মোল্লা বলেন, ওই তরুণ স্ত্রী, দুই ছোট সন্তান ও মাকে নিয়ে নৌকায় বসবাস করতেন। সপ্তাহখানেক আগে তাঁর পায়খানা-প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। ১৭ এপ্রিল প্রথমে মেহেন্দীগঞ্জের পাতার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং ১৮ এপ্রিল বিকেলে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। মেডিসিন ওয়ার্ডটি লকডাউন করা হলে তাঁকে করোনা ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে গতকাল বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি মারা যান। তাঁর লাশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী বরিশালে দাফন করার উদ্যোগ নিয়েছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বরিশালে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ৯ এপ্রিল। এরপর রোববার পর্যন্ত ১১ দিনে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার মধ্যে ভোলা বাদে পাঁচ জেলায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৪১ জনের। এর মধ্যে বরিশালে ২১ জন, বরগুনায় ১০ জন, পটুয়াখালীতে দুজন, পিরোজপুরে চারজন, ঝালকাঠিতে চারজন। বরিশালে আক্রান্ত ২০ জনের মধ্যে পাঁচজন চিকিৎসক, একজন মেডিকেল কলেজের ছাত্র, দুজন নার্স ও দুজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বরগুনায় দুজন এবং বরিশাল ও পটুয়াখালীতে একজন করে মোট চারজন করোনা শনাক্ত রোগী মারা গেছেন। এ ছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন চারজন।