দেশে মার্কেট-দোকানপাট খুললে করোনা সংক্রমণ বাড়বে -স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বর্তমান পরিস্থিতিতে দোকানপাট ও শপিংমল তথা মার্কেট খুলে দিলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরো বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, যেহেতু কি-না স্বাভাবিকভাবেই এখন মার্কেট খোলা হয়েছে, খোলা হয়েছে গার্মেন্টস। সেইসঙ্গে দোকানপাট খোলার সংখ্যাও বাড়ছে, কাজেই এটা আমরা ধরেই নিতে পারি যে, সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে।

তবে কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে বাংলাদেশে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও অন্যান্য দেশের তুলনায় সে হার এখনো কম বলে দাবি করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের মানুষ মারা যাচ্ছে, সেটা আপনারা জানেন। এ জন্য আমরা দুঃখিত। তবে মৃত্যুর হারটা এখনো অন্য দেশের তুলনায় কম আছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মঙ্গলবারের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৮৩ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজারের কাছাকাছি।

এর পরও গতকাল সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগামী ১০ মে থেকে শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা যাবে।

সরকারের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। বিশেষ করে, স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে দেশে সংক্রমণ আরো বেড়ে যাবে এবং করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ বিলম্বিত হবে। তাছাড়া অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন যে, সরকারের এই সিদ্ধান্ত আদৌ বিজ্ঞানসম্মত হচ্ছে কি না।

এমনই প্রেক্ষাপটে আজ বিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে করোনা সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক হয়। এতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ পরামর্শক কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তখন জাহিদ মালেক বলেন, এ বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটি একটি সুপারিশ দেবে সরকারকে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সেজন্য তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিতে পারেন বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পাশাপাশি জীবন ও জীবিকাও সচল রাখতে হবে।

সরকার ঘোষিত বিধি-নিষেধ (কার্যত লকডাউন) আরো কতদিন চলবে টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী সেটা নির্ধারণ করা হবে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

এদিকে, করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে গতকাল বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে সাধারণ ছুটি আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া আন্তঃজেলাসহ সকল গণপরিবহন ও সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে।