এইচএসসি পাস করে দাঁতের ডাক্তার

এক দশকের বেশি সময় ধরে দিয়ে চলছেন দাঁত ও মুখের চিকিৎসা। অথচ এইচএসসি পাস তিনি। ডাক্তারির কোন ডিগ্রি ছাড়াই চিকিৎসা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীতে নুরুস সাফা জাহাঙ্গীর নামে এমনই এক ব্যক্তিকে ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে ওরাল ভিউ ডেন্টাল ক্লিনিকের দু’টি শাখা।

এক ভুক্তভোগী বলেন, এই চিকিৎসক ঢিল মেশিন দিয়ে আমরা চারটি দাঁত ছিদ্র করে দিয়েছে। এরপর বলে, দাঁত চারটি ফেলে দিতে হবে। পরে অন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পর ওই চিকিৎসক বলে দাঁতগুলো নষ্ট করে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।

আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমরা ১২টি দাঁত কেটে ফেলেছে। এখন আমি অন্য আরেকজনের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি।

এভাবেই ভুল চিকিৎসায় চরম ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী। রাজধানীর শান্তিনগরে ওরাল ভিউ ডেন্টাল ক্লিনিকে তাদের সঙ্গে হয়েছে চরম প্রতারণা। স্কেলিং, রুট ক্যানেল, আঁকাবাঁকা দাঁত ঠিক করা, দাঁত ওঠানো, মাড়ির মাংস কাটাসহ মুখের সব ধরনের চিকিৎসা সংক্রান্ত চটকদার বিজ্ঞাপন ঝুলছে ছোট ঘরটির প্রবেশ মুখেই। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বেরিয়ে এলো ভয়াবহ তথ্য।

কোন ডাক্তারির ডিগ্রি নেই। সাকুল্যে এইচএসসি পাস হয়ে এক দশক ধরে রোগী দেখছেন নুরুস সাফা জাহাঙ্গীর। অন্যের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার জালিয়াতি করে নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন স্বীকৃত ডেন্টিস্ট হিসেবে। বানিয়ে নিয়েছেন জাল শিক্ষানবিশ সনদও।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল্লাহ বলেন, ডেন্টাল ক্লিনিকে যে ধরণের সংক্রামক রোধের ব্যবস্থা থাকা দরকার। সেগুলোর কিছু এখানে নেই। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোন অনুমোদন নেই।

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, এখানে সব ডকুমেন্টই ভুয়া। তিনি প্রতারণায় মাধ্যমে মানুষের জীবন নিয়ে খেলায় ১০-১২ বছর মাতোয়ারা ছিলেন।

দায় স্বীকার করে প্রতারক নুরুস সাফা জাহাঙ্গীরের দাবি, ইউনিভার্সিটি ডেন্টাল কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছেন বলেই নিজেকে যুক্ত রেখেছেন এ পেশায়।

অভিযান শেষে নুরুস সাফাকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সিলগালা করে দেয়া হয় ওরাল ভিউ ডেন্টালের দুটি শাখা।