ইউরো টুর্নামেন্টে ফেভারিট দলগুলোর একটি ফ্রান্স

২০১৬ সালে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ঘরের মাঠে শেষটা হতাশার কেটেছে ফ্রান্সের। ফাইনালে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের কাছে হেরে যায় ফরাসিরা। সেই হতাশা দুই বছর পর বিশ্বকাপ জিতে দূর করেছে তারা। এবার হারানো ইউরো শিরোপা জয়ের চ্যালেঞ্জ তাদের। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তারা পাচ্ছে শক্তিশালী দল। তাদের সব পজিশনেই আছে বিশ্বমানের ফুটবলার। খুব স্বাভাবিকভাবেই টুর্নামেন্টে ফেভারিট দলগুলোর একটি ফ্রান্স।

এই দলটায় তারকার অভাব নেই। বার্সেলোনার হয়ে দারুণ একটা মৌসুম পার করে ইউরোর প্রস্তুতি নিয়েছেন অ্যান্তনিও গ্রিজম্যান। দীর্ঘ ছয় বছর পর জাতীয় দলে ফিরে এসেছেন করিম বেনজেমা। চেলসিকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানো এনগোলে কান্তে আছেন দলটাতে। কিলিয়ান এমবাপ্পে নামক ‘বিস্ময় বালক’ তো দলটির বড় বিজ্ঞাপন হয়ে উঠেছেন। পল পগবা, লরিসের মতো অভিজ্ঞ ফুটবলারও আছেন তরুণ প্রতিভাবান ফুটবলারদের সঙ্গে। ইউরোর তৃতীয় শিরোপা জয়ে তাদের দিকেই তাকে থাকবেন ফরাসিরা।

প্রধান কোচ – দিদিয়ের দেশাম: খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে অনেক আগেই প্রমাণ করেছেন দেশাম। তার নেতৃত্বে ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপ ও ২০০০ সালে ইউরো কাপ জিতেছিল ফ্রান্স। কোচ হিসেবেও অনন্য তিনি। দেশামের অধীনে ২০১৮ সালে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি জিতেছে ফরাসিরা। ২০১৬ ইউরোতে ওঠে ফাইনালে। যা দেশামকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ-ইউরো জেতা দেশাম এবার কোচ হিসেবে এই অর্জনের স্বপ্ন দেখছেন।

প্রধান অস্ত্র – এন‘গোলো কান্তে: ২০১৬ সালে সবাইকে চমকে দিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জেতে লেস্টার সিটি। তাদের স্বপ্নযাত্রার অন্যতম সারথি ছিলেন কান্তে। সাম্প্রতিক বছরে এই ফুটবলার আলাদাভাবেই নজরে এসেছেন। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ওপর দাঁড়িয়ে কদিন আগে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় ট্রফি জিতেছে চেলসি। এবার ফ্রান্সের হয়ে ইউরো জেতার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। টুর্নামেন্টে দেশামের তুরুতের তাস হতে পারেন কান্তে। পগবাকেও ব্যবহার করতে পারেন ফ্রান্স কোচ।

তরুণ তুর্কি – কিলিয়ান এমবাপ্পে: ২০১৮ বিশ্বকাপের উদীয়মান সেরা ফুটবলারের মুকুট জিতেছিলেন এমবাপ্পে। এবারের ইউরোতে আরো পরিণত পিএসজি সুপারস্টার। গোল করতে এবং করাতে দুই দিকেই সমান পারদর্শী এই তারকা। তাকে আগামী দিনের ব্যালন ডি’অরজয়ী ভাবা হয়। ২২ বছর বয়সী এমবাপ্পে ফ্রান্স দলের এখনো সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার। এমবাপ্পে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলে এই টুর্নামেন্টে ইতিবাচক ফল পেতে পারে ফ্রান্স।

গ্রুপপর্ব: এবারের ইউরোতে বাজির দরে শীর্ষে আছে ফ্রান্স। কিন্তু শিরোপা জয় অনেক দূরের পথ। আপাতত তাদের ভাবতে হচ্ছে গ্রুপপর্ব নিয়ে। কারণ ‘এফ’ গ্রুপটা তাদের জন্য মৃত্যুকূপ। এখানে আছে সাবেক চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল ও পুনর্জন্ম হওয়া হাঙ্গেরি। আজ জার্মানির বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে স্বপ্নযাত্রা শুরু করবে ফ্রান্স। এরপর হাঙ্গেরি ও পর্তুগিজদের মুখোমুখি হবে তারা। ফরাসিদের জন্য অস্বস্তি হচ্ছে, গ্রুপের সবকটি ম্যাচ তারা খেলবে অন্যের মাঠে। তবে আজ জার্মানির মাঠে জয়ের বিকল্প ভাবছে না ফরাসিরা।

সম্ভাব্য একাদশ: গোলরক্ষক: লরিস; ডিফেন্ডার: পাভার্ড, ভারানে, কিম্পেম্বে, হার্নান্দেজ; মিডফিল্ডার: কান্তে, পগবা, কোম্যান; ফরওয়ার্ড: গ্রিজম্যান, এমবাপ্পে, বেনজেমা।

সেরা সাফল্য: চ্যাম্পিয়ন (১৯৮৪, ২০০০)

ফিফা র্যাঙ্কিং: ২

ফ্রান্স ম্যাচসূচি:

১৫ জুন: জার্মানি-ফ্রান্স (মিউনিখ)
১৯ জুন: ফ্রান্স-হাঙ্গেরি (বুদাপেস্ট)
২৩ জুন: ফ্রান্স-পর্তুগাল (বুদাপেস্ট)