
মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স.)-এর কার্টুন প্রদর্শনের অধিকারের পক্ষে ফ্রান্স যুক্তি দেওয়ার পর পাকিস্তানে কয়েক মাস আগে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। সেই বিক্ষোভ এখন রক্তক্ষয়ী সঙ্ঘাতে রূপ নিয়েছে। ফ্রান্স-বিরোধী সহিংস বিক্ষোভ চলার কারণে সেখানে থাকা সব নাগরিককে পাকিস্তান ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স। এ আহ্বানের পর পাকিস্তান ছাড়তে শুরু করেছেন ফরাসিরা।
পাকিস্তানে ফরাসি দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে ফ্রান্সের স্বার্থসংশ্লিষ্ট স্থান এবং ব্যক্তিরা গুরুতর হুমকিতে রয়েছেন। দূতাবাস সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারেও সতর্ক করে দিয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নতুন সংঘর্ষে এ সপ্তাহে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
ফ্রান্সে একটি স্কুলের ক্লাসে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনার সময় এ ধরনের কার্টুন দেখানোর পর একজন শিক্ষকের শিরশ্ছেদের ঘটনার পর গত বছর অক্টোবরে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ মহানবী (স.)-এর কার্টুন দেখানোর অধিকারের পক্ষে জোরালো যুক্তি দেন।
এর জেরে পাকিস্তানসহ গোটা মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। অনেক মুসলিম দেশ ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক দেয়। মহানবীর চিত্র প্রদর্শন ইসলামে পুরোপুরি নিষিদ্ধ এবং মুসলমানদের কাছে এটা অবমাননাকর এবং ধর্মদ্রোহিতার সামিল।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই লাব্বায়িক পাকিস্তান-এর নেতা সাদ হুসেইন রিজভীকে পাকিস্তান সরকার গ্রেপ্তার করার পর এ সপ্তাহে প্রতিবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এই দলটি পাকিস্তান থেকে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছিল।
রিজভীর গ্রেপ্তার এবং টিএলপি দলকে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর দলের হাজার হাজার সমর্থক পাকিস্তানের রাস্তায় নেমে আসেন এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ রাবার বুলেট ছোঁড়ে এবং টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ বলেন, পাকিস্তান মহানবী (স.)-এর সম্মান অক্ষুণ্ন রাখার পক্ষে। কিন্তু টিএলপির দাবি মেনে নিলে বিশ্বের চোখে পাকিস্তান একটি উগ্রপন্থী দেশ হিসাবে পরিগণিত হবে।
পাকিস্তানে ফরাসি দূতাবাস বৃহস্পতিবার তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় এ বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। সেই বিবেচনা থেকে, এবং যেহেতু পাকিস্তানে ফরাসি স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব কিছু হুমকির মুখে পড়েছে, ফরাসি নাগরিকদের বর্তমানে চালু থাকা বাণিজ্যিক বিমান ব্যবহার করে সাময়িকভাবে পাকিস্তান ত্যাগ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’