করোনায় যুক্তরাষ্ট্রের মৃত্যুর সংখ্যা ভিয়েতনামের যুদ্ধকেও ছড়িয়ে

করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে মৃতদেহের মিছিল নেমেছে, তাতে এর আগে কবে এভাবে মারা গেছেন দেশটির নাগরিকরা, তা খুঁজতে শুরু করেছেন অনেকে। যুক্তরাষ্ট্র গত শতাব্দীর সবচেয়ে বড় সামরিক আগ্রাসন চালিয়েছিল ভিয়েতনামের ওপর। প্রায় ৩২ লাখ নিরীহ ভিয়েতনামীর পাশাপাশি ওই যুদ্ধে মারা পড়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ৫৮ হাজার ২২০ জন মার্কিন সেনা। এবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা তাকেও ছাড়িয়ে গেল।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন ৫৯ হাজার ২৮৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪৭০ জন। এই মুহূর্তে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৮৬৫ জন।

১৯৫৯ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ভিয়েতনামে আগ্রাসন চালায় যুক্তরাষ্ট্র। উদ্দেশ্য ছিল ভিয়েতনামে সাম্যবাদবিরোধী সরকার গঠনে সহায়তা করা। কিন্তু তাদের সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়নি, উল্টো লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের সঙ্গে মারা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ৫৮ হাজারেরও বেশি সেনা। পঙ্গু হয়েছেন আরো অন্তত তিন লাখ মার্কিনী।

এই মুহূর্তে এমন তুলনার আরো একটি কারণ আছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের লণ্ডভণ্ড হওয়ার জোগাড়। অন্য কোনো রাষ্ট্রের ক্ষতির পরিমান এর ধারেকাছেও নয়। অন্যদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার পরও সবচেয়ে ভালো থাকা দেশের তালিকার ১ নম্বরেই সম্ভবত ভিয়েতনামের অবস্থান।

ভিয়েতনামে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় মার্চ মাসের ৬ তারিখে। প্রায় দুই মাস পরে এসে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ২৭০ জন! এর মধ্যে আবার সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২২২ জন। মৃত্যুবরণ করেননি একজনও। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এমন ‘ম্যাজিক্যাল’ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সারা পৃথিবী দেশটির প্রশংসায় মেতে উঠেছে।