ইতিহাসে প্রথম শূন্যের নিচে তেলের দাম

নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের ভয়ে গোটা বিশ্বের মানুষ আজ ঘরবন্দি। বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কল-কারাখানা বন্ধ থাকায় থমকে আছে অর্থনীতির চাকা। লকডাউনের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় চাহিদা কমেছে জ্বালানি তেলের। দামেও নেমেছে রেকর্ড পরিমাণ ধস।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের দাম নেতিবাচক সূচকে নেমে এসেছে। অর্থ্যাৎ এ দিন দেশটির জ্বালানি তেলের দাম নামতে নামতে শূন্যের নিচে নেমে এসেছে। যা বিশ্ব ইতিহাসে রেকর্ড। ফলে তেল নিয়ে বিপাকে পড়েন বিক্রেতার। বলা যায়, তেল কেনার জন্য উল্টো ক্রেতাদের টাকা দিচ্ছেন বিক্রেতারা। শুধু সংরক্ষণাগার থেকে এটি সরাতে চাইছেন তারা।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে ট্যাঙ্কার ভাড়া করে উদ্বৃত্ত তেল মজুদ করেছে। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় চাহিদার তুলনায় তেলের জোগান মাত্রাতিরিক্ত বেশি হয়ে গেছে। ফলে মজুদ থাকা তেল নিয়ে বিপাকে পড়ে প্রতিষ্ঠানগুলো। এমনকি দাম কমতে কমতে সোমবার প্রতি ব্যারেল তেলের দাম গিয়ে ঠেকে মাইনাস ৩৭ দশমিক ৬৩ ডলারে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, আগামী মে মাস নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে তেল মজুদ রাখার ট্যাঙ্কারগুলো পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। ততদিনে চাহিদা বৃদ্ধি না পেলে তেলের দাম নিয়ে আরো বিপাকে পড়বে দেশটি।

সিএফআরএ রিসার্চের জ্বালানি শক্তি বিশ্লেষক স্টুয়ার্ট গ্লিকম্যান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি পণ্যটির দাম শূন্যের নিচে নেমে যাওয়া খুবই অস্বাভাবিক। এটি মানুষের প্রত্যাশার বাইরে ছিল।

ভয়েস অব অ্যামেরিকা তাদের খবরে বলে, করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বের মানুষ এখন ঘরমুখী। ফলে রাস্তায় যানবাহন চলাচল সীমিত হওয়ায়, জ্বালানি তেলে চাহিদা কমেছে। সংরক্ষণাগারগুলোর ধারণক্ষমতা শেষ হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসে। গত ১৩ এপ্রিল আলোচনা শেষে উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় ওপেক প্লাস ও তেল উৎপাদক মিত্রদেশগুলো। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দৈনিক ৯৭ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানো হবে। যা সারাবিশ্বের বর্তমান উৎপাদনের ১০ শতাংশ।