এবারও চামড়ার দামে বিপর্যয়

এবারও ঠেকানো যায়নি কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বিপর্যয়। সরকারের পক্ষ থেকে আগেই চামড়ার দাম নির্ধারণ ও রপ্তানির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তারপরও গতকাল শনিবার ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি শেষে রাজধানীতে গরুর চামড়া আকারভেদে ১৫০-৬০০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ২-১০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

গত বছরের তুলনায় এবার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম ২০-২৯ শতাংশ কমিয়ে নির্ধারণ করেছিলো সরকার। তারপরও রাজধানীর জিগাতলা ট্যানারি মোড় ও পোস্তার আড়তসহ প্রায় সব জায়গায় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক কম দামে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি হতে দেখা গেছে।

গত সপ্তাহে চামড়া শিল্পের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বৈঠকে এবারের কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। রাজধানীতে লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ধরা হয়েছিল প্রতি বর্গফুট ৩৫-৪০ টাকা। আর রাজধানীর বাইরে দেশের অন্যান্য জায়গায় দাম ধরা হয়েছিল প্রতি বর্গফুট ২৮-৩২ টাকা। ছাগলের চামড়ার দাম ধরা হয়েছিল প্রতি বর্গফুট ২৮-৩২ টাকা। এছাড়া চামড়ার দরপতন ঠেকাতে ঈদের তিনদিন আগে কাঁচা ও ওয়েট-ব্লু চামড়া রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

গতকাল শনিবার রাজধানীর পুরান ঢাকার পোস্তায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে কোরবানির পশুর চামড়া কিনে ট্রাক ও পিকআপে করে আড়তে আনছেন। আড়তদাররা দরদাম করে তাদের কাছ থেকে সেই চামড়া কিনছেন। তারপর আড়তের ভেতরে নিয়ে সেই চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করছেন।

সেখানকার এক আড়তদারের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে আসছেন। তাদের কাছ থেকে বড় গরুর চামড়া কিনেছেন ৫০০-৬০০ টাকা এবং মাঝারি গরুর চামড়া কিনেছেন ৩০০-৩৫০ টাকায়। আর ১০ টাকায় চারটি ছাগলের চামড়া কিনেছেন।

আরেক ব্যবসায়ী জানান, ছোট সাইজের গরুর চামড়া কিনেছেন ১৫০-২৫০ টাকায়, আর বড় সাইজের গরুর চামড়া কিনেছেন ৪০০-৬০০ টাকায়।

আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ চামড়া কম এসেছে। গতবারের চেয়ে এবার তুলনামূলকভাবে কম পশু কোরবানি হওয়ায় চামড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু তারপরও চামড়ার দাম কম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খান বলেন, যে দামে কাঁচা চামড়া বিক্রি হচ্ছে তা ঠিকই আছে। কারণ প্রতি বর্গফুট চামড়া প্রকিয়াজাত করতে আড়তদারদের প্রায় ৮ টাকার মতো খরচ করতে হয়। তাছাড়া এবার বেশিরভাগ আড়তদার ও ট্যানারি মালিক অর্থ সংকটে রয়েছেন।