
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানগণ করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে বিশ্বযুদ্ধের সাথে তুলনা করেছেন। আর এই যুদ্ধের ‘ফ্রন্টলাইন ফাইটার’ হচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ফলে তাদের জন্য ঘোষণা করা হচ্ছে বিশেষ বীমা। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সে ধরনের কোনো সরকারি তৎপরতা চোখে পড়েনি।
পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশের তো বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতেও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিশেষ বীমার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে অনুপ্রাণিত করার জন্য নানা প্রণোদনার খবরও আসছে প্রতিদিন।
এতোদিন স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জামেরও অভাব ছিলো। সর্বশেষ সরকারি তথ্য মতে, সেই অভাব অনেকটাই কাটিয়ে উঠা গেছে। কিন্তু স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রণোদনার জন্য কোনো ঘোষণা এখনো আসেনি। অথচ করোনা ভাইরাসের মতো মারণ ভাইরাস মোকাবেলায় স্বাস্থ্যকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন।
সাধারণ যুদ্ধে যুদ্ধপোশাক, হেলমেট বা অস্ত্র ছাড়া একজন যোদ্ধাকে কল্পনাই করা যায় না। এ ছাড় তাদের জন্য আরো নানা ধরনের রাষ্ট্রীয় সুবিধা থাকে। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সামরিক শক্তির কোনোই মূল্য নেই। এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজন কেবলই স্বাস্থ্যকর্মী। কিন্তু তাদের জন্যই যদি সুবিধার ঘোষণা না আসে, তা একই সাথে অমানবিক এবং লজ্জাষ্কর বিষয়।
অবশ্য শুধু স্বাস্থ্যকর্মীরা নন, এই সময়ে যাদের ডিউটি করতে হচ্ছে, যেমন সামাজিক দূরত্ববিধি নিশ্চিত করতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কাজ করছেন এবং আরো কিছু পেশার কাজ এখনো চলছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের মতো তাদের জন্যও প্রণোদনা ঘোষণা করা জরুরি।
যেহেতু করোনা ভাইরাস ধর্ম-বর্ণ বা পেশার পার্থক্যের কারণে কোনো মানুষে সংক্রমিত হওয়া থেকে বিরত থাকে না, সেহেতু যদি কোনো স্বাস্থ্যকর্মী বা এখনো কাজে আছেন, এমন কোনো পেশার কর্মী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, তাহলে তার পরিবার বীমা সুবিধা থেকে উপকৃত হবে।
এই খাতের জন্য ফান্ড সংগ্রহে সরকার, ব্যাংক, কর্পোরেট-সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বেসরকারি খাত, বিদেশি অনুদান ব্যবস্থা এক যোগে কাজ করতে পারে।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের উচিত অনতিবিলম্বে এই ধরনের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা। এই উদ্যোগের প্রাথমিক ধাপ হতে পারে একটি সমন্বিত জাতীয় কমিটি গঠন করা। যারা ফান্ড সংগ্রহ, পলিসি তৈরি ও বন্টণের কাজ তদারকি করবেন। এই ফান্ডের কোনো টাকা বেঁচে গেলে তা স্বাস্থ্যখাত উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।