একজন বিপদগামী অসৎ মানুষের কাছে ম্লান হতে পারেনা বাংলাদেশ পুলিশের এতো অর্জন

বাংলাদেশ পুলিশ। একটি বাহিনী,একটি নাম, একটি আবেগ। স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণের ন্যায়পথে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার নিশ্চিত করতে দিন-রাত অতন্দ্র প্রহরী হয়ে যারা পাহারা দিয়ে যাচ্ছেন, আইনের অনুশাসন নিশ্চিত করে জনগণকে আইনি সেবা দিতে যারা জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করছেন, তারাই বাংলাদেশ পুলিশ।

করোনা কালে বাংলাদেশ পুলিশের কার্যক্রম সকল মহলে ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে। জনগণের মাঝে নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিত করা, মাস্ক বিতরণ করা, স্যানিটাইজার বিতরণ করা, অসহায় মানুষদের মাঝে খাবার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিতরণ, করোনা আক্রান্তদের বাসায় প্রয়োজনীয় বাজার সামগ্রী পৌছে দেওয়া, করোনা সচেতনতায় মাইকিং, লিফলেট বিতরণ সহ ইত্যাদি বিভিন্ন কাজ করেছে পুলিশ। যার অনেক কিছুই পুলিশের কাজের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু করোনা কালে তারা মানবতার সর্বোচ্চ নিদর্শন দেখিয়েছেন। দেশের এই কঠিন বিপদের সময় জনগণের জন্যে কাজ করে একজন এসপি এবং একজন এএসপি সহ এখন পর্যন্ত ৬০ জন পুলিশ সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন অনেক। দেশ এবং জনগণের প্রতি পুলিশের এই নিবেদন যখন সারাদেশে পুলিশকে প্রশংসার জোয়ারে ভাসাচ্ছিলো, ঠিক তখনই পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করা, একজন বিপদগামী, অসৎ মানুষ প্রদীপ কুমারের দ্বারা সংঘটিত একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় আমাদের সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে চায়ের দোকানে আড্ডা দেওয়া বুদ্ধিজীবীরাও পুলিশকে আপাদমস্তক ধুয়ে দিতে ছাড় দিচ্ছেন না। অথচ ক’দিন আগে আমাদের সেবায় পুলিশের এই অবদান, আত্মত্যাগ আমরা এতো সহজে ভুলে গেলাম..! আমি মনে করি কোনো ব্যক্তির অপরাধের জন্যে সে ব্যক্তি নিজে দায়ী, কোনো বাহিনী বা প্রতিষ্ঠান নয়। ধরেন আপনার পরিবারে আপনার খালাতো ভাই, অথবা চাচাতো ভাই একটা অপরাধ করলো। তার অপরাধের জন্যে সে শাস্তি পাবে। কিন্তু তার জন্যে যদি আপনি সমালোচিত হন অথবা পরিবারের বাকি অন্য কেউ অপরাধ না করেও সমালোচিত হয়। তখন বিষয় টা কেমন লাগবে? ঠিক তেমনি ব্যক্তি প্রদীপ কুমারের অপরাধের শাস্তি সে পাবে। আমরা বরঞ্চ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তার শাস্তি নিশ্চিত কর‍তে পারি। কিন্তু ব্যক্তি প্রদীপের জন্যে পুরো পুলিশ বাহিনীর মুন্ডুপাত করতে পারি না। ব্যক্তি প্রদীপের অপরাধের জন্যে পুলিশ বাহিনীর এতো ত্যাগ, এতো অর্জন ম্লান হয়ে যেতে পারে না।

লেখকঃ শেখ রুমু, সহ-সভাপতি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ